শেষের কবিতা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
বই পরিচিতিঃ
শেষের কবিতা পটভূমিকাহীন গল্প। এই উপন্যাস নায়ক-নায়িকা প্রধান নয়, বক্তব্য প্রধান। রোমান্স প্রেমের মুক্তির দিক। বিবাহ প্রেমের বন্ধন। রোমান্সে কল্পনার আকাশ। অসীম ও অনন্ত হয়। বিবাহে কল্পনার পক্ষচ্ছেদ হয়। কেননা তখন মনের দাবিটা নয়, মানিয়ে নেওয়াটাই বড় কথা হয়। পুরুষের মনের গোপন রহস্য, সে রোমাঞ্চ ও বিবাহ দু'টিকেই পেতে চায়। নারীকে সে একান্তই নিজের করে নিতে চায়। এটা পুরুষের মনের গোপন রহস্য হলেও এত বড় দুর্জয় দাবি করার ক্ষমতা বা সাহস সকল পুরুষের থাকে না। অমিত রায় সেই অল্পেরই একজন। নিজের ভবিষ্যৎ বিবাহিত জীবনের যে চিত্র সে অংকন করেছে তাতে তার জীবনের দাবিটি সম্পূর্ণরূপে প্রাত্যহিকের গ্লানি মুক্ত। অমিতের স্বপ্ন যত সুন্দর ও সত্য হোক না কেন, ধূলিমাটির সংসারে সে স্বপ্ন রূপ গ্রহণ করতে পারে না, সেটা বোঝা লাবন্যের মত বুদ্ধিমতী মেয়ের মোটেই অসম্ভব নয়। তাই অমিতের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা যত প্রবলই হোক না কেন, বিবাহের প্রয়োজনে আর্টিস্ট অমিতকে নয়, সাংসারিক পুরুষ শোভনলালকেই বরণ করে নিয়েছে সে।
অমিতের প্রেমে আছে কল্পনার প্রাচুর্য ও রোমান্সের উম্মাদনা, শোভনলালের প্রেমে আছে ধৈর্যের প্রাচুর্য ও আশ্বাসের আস্তানা। অমিতের ভালবাসা বেহিসেবি, তাই ভর সহ্য হয় না। শোভনলালের ভালোবাসার নির্ভয়ের বস্তু। লাবণ্য তাই শোভনলালের কাছে আশ্রয় নিয়েছে। যার কথা অমিতকে বলেছে ‘শেষের কবিতা’য় :
অমিতের প্রেমে আছে কল্পনার প্রাচুর্য ও রোমান্সের উম্মাদনা, শোভনলালের প্রেমে আছে ধৈর্যের প্রাচুর্য ও আশ্বাসের আস্তানা। অমিতের ভালবাসা বেহিসেবি, তাই ভর সহ্য হয় না। শোভনলালের ভালোবাসার নির্ভয়ের বস্তু। লাবণ্য তাই শোভনলালের কাছে আশ্রয় নিয়েছে। যার কথা অমিতকে বলেছে ‘শেষের কবিতা’য় :
যে আমারে দেখিবারে পায়
অসীম ক্ষমায়
ভালোমন্দ মিলায়ে সকলি,
এবার পূজায় তারি আপনারে দিতে চাই বলি।
পুরুষের কামনা ও বাসনা একটি নারীকে কেন্দ্র করে পরিতৃপ্তি লাভ করতে পারে কিনা, না এর জন্য দু'টি পৃথক নারীর প্রয়োজন, এই গূঢ় সমস্যা সামাজিক কারণেই লেখকের পক্ষে আর আলোচনা করা সম্ভব ছিল না। উপন্যাসিক চরম মুহুর্তে কাব্যের দুর্গে আশ্রয় গ্রহণ করে আত্মরক্ষা করেন। কাব্যের সৌন্দর্যে সমস্যার নগ্নমূর্তি চাপা পড়েছে। সাহিত্যে আমরা সমস্যার সমাধান চাই না, চাই সমস্যার সজীব সুন্দর রূপায়ন। ‘শেষের কবিতা’ উপন্যাসের এটি ত্রুটি নয়, অলংকরণ।
Read & Download (google drive)
File Size: 1 Mb
File Size: 1 Mb
লেখক পরিচিতিঃ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (৭ই মে, ১৮৬১ - ৭ই আগস্ট, ১৯৪১) (২৫ বৈশাখ, ১২৬৮ - ২২ শ্রাবণ, ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাঁকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে গুরুদেব, কবিগুরু ও বিশ্বকবি অভিধায় ভূষিত করা হয়।
রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তাঁর জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তাঁর সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য উনিশ খণ্ডে চিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত। এছাড়া তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
0 comments:
Have a problem downloading the book or comment to upload the book you need ...